• মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দেশ ও বিদেশ নীতি

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দেশ ও বিদেশ নীতি

  আন্দোলন প্রতিবেদন  

রবিবার, ১১ মে ২০২৫  |  অনলাইন সংস্করণ

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট যে দল থেকেই নির্বাচিত হোক সাধারণভাবে  তাদের বিদেশ নীতিতে মৌলিক কোনো পরিবর্তন হয় না। যেটা হয় তাহলো কৌশলগত পরিবর্তন। কিন্তু এবারে ফ্যাসিস্ট ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর সেই আমেরিকার দেশীয় ও বিদেশ নীতিতে অনেক ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যা নিয়ে সারা বিশ্বে তোলপাড় হচ্ছে। ট্রাম্প বুর্জোয়া গণতন্ত্র বা আমেরিকার সংবিধান কোনো কিছুরই তোয়াক্কা না করে সকালে একটা বিকেলে আরেকটা ঘোষণা দিয়ে চলেছে। ইতিমধ্যেই মিডিয়া জগতে ট্রাম্প পাগল প্রেসিডেন্ট হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করেছে।  

ক্ষমতাসীন হয়ে ট্রাম্প পুরো রাষ্ট্র জুড়ে ফেডারেল সরকারে নিয়োগ বন্ধ ঘোষণা করে, প্রশাসনের ৩০ হাজারেরও বেশি কর্মকর্তাদের চাকুরিচ্যুত করে এবং এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। তারা নতুন আইনে ব্যাখ্যা করে বিভিন্ন বিভাগ ও সংস্থাকে জাতীয় নিরাপত্তাকে তাদের প্রধান কার্যক্রম হিসেবে গণ্য করে তাকে ব্যাপকভাবে প্রসারিত করছে। ফেডারেল শ্রমিক ইউনিয়নকে “শত্রু” ঘোষণা করে। মার্চ’২৫-এর শেষ দিকে জারি করা একটি নির্বাহী আদেশ ডজনখানেক বিভাগ ও সংস্থাকে ফেডারেল শ্রম-ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি থেকে বাদ দেয়, যার ফলে তারা তাদের যৌথ দরকষাকষির চুক্তিগুলো বাতিল করতে অদালতের শরনাপন্ন হয় যা ১০ লক্ষ ফেডারেল কর্মীকে ইউনিয়ন সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত করবে– ট্রাম্প এমন বহু আদেশ জারি করেছে।   

পররাষ্ট্র নীতিতে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিকে ভিত্তি করে ট্রাম্প মার্কিন সরকারকে বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-এর সাথে তহবিল সরবরাহ এবং সহযোগিতা বন্ধ করার নিদের্শ দেয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সংস্থা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে আসার অভিপ্রায় ঘোষণা করে। ট্রাম্প বাণিজ্যিক অংশীদার চীন, কানাডা, মেক্সিকোর উপর ব্যাপক শুল্ক আরোপ করে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)-তে আমেরিকার আর্থিক অনুদান স্থগিত করে। এপ্রিল ’২৫-এ  ট্রাম্প ১৮০টিরও বেশি দেশের উপর ১০%  বা তার বেশি শুল্ক আরোপ করে। পরে ৫৭টি দেশের উপর উচ্চতর শুল্ক সাময়িকভাবে স্থগিত করেন। এবং চীনের উপর শুল্ক বাড়িয়ে ১৪৫% করে। যা সামগ্রিক বাণিজ্যের গড় শুল্ক ২৪% নিয়ে যায়। যার ফলে মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধের মুখোমুখি। চীন এখন ভারত-ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ সকল রাষ্ট্রকে নিয়ে মার্কিন বিরোধী জোট গঠনের ডাক দিয়েছে।   

ঘোষিত নতুন বিদেশ নীতিতে ইউক্রেন-সিরিয়া-ফিলিস্তিন-লেবানন-ইরান-ইয়েমেনসহ যুদ্ধ বিধ্বস্থ দেশগুলো আরো ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পরপরই নির্লজ্জের মতো এই বুড়ো ব্যবসায়ী দানব ইউক্রেনের মূল্যবান খনিজ সম্পদের শেয়ার দাবি করে এবং ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা খালি করে বিনোদন কেন্দ্র বানানোর ঘোষণা দেয়। যা মধ্যযোগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। একই সাথে আমেরিকান সভ্যতা তথা বুর্জোয়া গণতন্ত্রের ভন্ডামির খোলস নগ্নভাবে প্রকাশিত হয়েছে। 

 ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই ডেমোক্রাট প্রেসিডেন্ট বাইডেনের পথ ধরেই তুরস্কের ধর্মবাদী ফ্যাসিস্ট এরদোগানের সাথে মিলে আমেরিকার প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়ার মধ্যপ্রাচ্যে সোল এজেন্ট/দালাল সিরিয়ার ফাসিস্ট আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে সিরিয়ায় তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। শুধু তাই নয়, এখন মার্কিন-তুরস্ক যৌথ বাহিনী কুর্দিস্তানে আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের জন্য সংগ্রামরত মাওবাদী ও জাতীয়তাবাদীদের উচ্ছেদের ঘোষণা দিয়ে কুর্দি জনগণের উপর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। 

খুনি বাইডেনের শাসন আমলে শুরু হওয়া যুুুুুুুুুু্দ্ধে ইসরাইল ফিলিস্তিনে প্রায় ৫০ হাজারের বেশি জনগণকে হত্যার পরে প্রথমবার যুদ্ধ বিরতি চলছিল। বর্তমানে ফ্যাসিস্ট ট্রাম্পের মদদে ইসরাইল সেই যুদ্ধ বিরতি ভঙ্গ করে দ্বিতীয় দফা গণহত্যা চালাচ্ছে। অন্যদিকে মার্কিন সেনাবাহিনী পার্শ্ববর্তী ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের দমনের জন্য সরাসরি বিমান হামলার পরে স্থল বাহিনী নামানোর ঘোষণা দিয়েছে। বাশার সরকার পতনের পর সিরিয়ায় ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে।  

মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও তার পাচাটা ইসরাইলের চিরশত্রু ধর্মবাদী ইরানকে নিয়ন্ত্রণের জন্য ইরানে ইসরাইলের মাধ্যমে আক্রমণ/আগ্রাসনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই যুদ্ধ-চাপের পাশাপাশি আলোচনার মাধ্যমে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধের জন্য চুক্তি করতে চাইছে। এভাবে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ভয়াবহ যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে বিশ্বযুদ্ধের হুমকি সৃষ্টি করছে। 

ট্র্যাম্পের এই ফ্যাসিবাদকে আইন সম্মত দেখানোর জন্য অতি সম্প্রতি মার্কিন সুপ্রীম কোর্ট প্রেসিডেন্টকে বিরল যুদ্ধকালীন আইন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। যে আইনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট তার শত্রু দেশের নাগরিকদের কোনো ধরনের আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই আটক বা শাস্তি প্রদান করতে পারবে। অভিবাসীদের উপর বিভিন্ন ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে। 

মার্কিন অর্থনীতিতে চরম সংকট বিরাজমান। তাই ট্রাম্প প্রশাসন অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ ব্যয় কমানো এবং বাণিজ্য যুদ্ধের মাধমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য উপরোক্ত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করে মার্কিন অর্থনীতি চাঙ্গা করতে চাচ্ছে। পাশাপাশি চীনকে কোণঠাসা করে বিশ্বব্যাপী নিজ কর্তৃত্ব বজায় রাখা বা মধ্যপ্রাচ্যে একক কর্তৃত্ব সৃষ্টি করাই তার লক্ষ্য। যার প্রেক্ষিতে বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার কথিত মানবিক কর্মসূচির ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। বিশেষত আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইয়েমেনসহ ১১টি যুদ্ধবিধ্বস্থ দেশ আরো সংকটে পড়বে। জাতিসংঘ এই সিদ্ধান্তকে মৃত্যুদণ্ডের সাথে তুলনা করেছে। ট্রাম্পের এই সব নীতির জন্য মার্কিন সহ বিশ্ব জনগণের উপর যুদ্ধসহ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মরার উপর খাড়ার ঘাঁ নেমে আসছে। এর জন্য খোদ মার্কিনী জনগণ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী বিক্ষোভ শুরু করছে। ইসরায়েল প্রশ্নে বিশ্ব জনগণ ক্ষোভে ফুঁসছে। 

সাম্রাজ্যবাদ-পুঁজিবাদ যখন ঘোরতর সংকটে পড়ে, তখন যুদ্ধ বাধিয়ে, যুদ্ধের মাধ্যমে সংকট মোচন করার চেষ্টা করে, এমনকি বিশ্বযুদ্ধের হুমকিতে ফেলে। মহামতি লেনিন বলেছেন– সাম্রাজ্যবাদ মানে যুদ্ধ-ধ্বংস। ট্রাম্প এখন সে পথেই তার সংকট মোচনের পথ খুঁজছে। বিপরীতে বিশ্ব জনগণের বিদ্রোহ-বিক্ষোভ সাম্রাজ্যবাদের করব খুঁড়ছে। প্রয়োজন এখন শ্রমিকশ্রেণির নেতৃত্বে এই বিদ্রোহ-বিক্ষোভকে পরিচালিত করা। 

         – ২২ এপ্রিল, ২০২৫

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দেশ ও বিদেশ নীতি

 আন্দোলন প্রতিবেদন 
রবিবার, ১১ মে ২০২৫  |  অনলাইন সংস্করণ

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট যে দল থেকেই নির্বাচিত হোক সাধারণভাবে  তাদের বিদেশ নীতিতে মৌলিক কোনো পরিবর্তন হয় না। যেটা হয় তাহলো কৌশলগত পরিবর্তন। কিন্তু এবারে ফ্যাসিস্ট ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর সেই আমেরিকার দেশীয় ও বিদেশ নীতিতে অনেক ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যা নিয়ে সারা বিশ্বে তোলপাড় হচ্ছে। ট্রাম্প বুর্জোয়া গণতন্ত্র বা আমেরিকার সংবিধান কোনো কিছুরই তোয়াক্কা না করে সকালে একটা বিকেলে আরেকটা ঘোষণা দিয়ে চলেছে। ইতিমধ্যেই মিডিয়া জগতে ট্রাম্প পাগল প্রেসিডেন্ট হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করেছে।  

ক্ষমতাসীন হয়ে ট্রাম্প পুরো রাষ্ট্র জুড়ে ফেডারেল সরকারে নিয়োগ বন্ধ ঘোষণা করে, প্রশাসনের ৩০ হাজারেরও বেশি কর্মকর্তাদের চাকুরিচ্যুত করে এবং এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। তারা নতুন আইনে ব্যাখ্যা করে বিভিন্ন বিভাগ ও সংস্থাকে জাতীয় নিরাপত্তাকে তাদের প্রধান কার্যক্রম হিসেবে গণ্য করে তাকে ব্যাপকভাবে প্রসারিত করছে। ফেডারেল শ্রমিক ইউনিয়নকে “শত্রু” ঘোষণা করে। মার্চ’২৫-এর শেষ দিকে জারি করা একটি নির্বাহী আদেশ ডজনখানেক বিভাগ ও সংস্থাকে ফেডারেল শ্রম-ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি থেকে বাদ দেয়, যার ফলে তারা তাদের যৌথ দরকষাকষির চুক্তিগুলো বাতিল করতে অদালতের শরনাপন্ন হয় যা ১০ লক্ষ ফেডারেল কর্মীকে ইউনিয়ন সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত করবে– ট্রাম্প এমন বহু আদেশ জারি করেছে।   

পররাষ্ট্র নীতিতে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিকে ভিত্তি করে ট্রাম্প মার্কিন সরকারকে বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-এর সাথে তহবিল সরবরাহ এবং সহযোগিতা বন্ধ করার নিদের্শ দেয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সংস্থা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে আসার অভিপ্রায় ঘোষণা করে। ট্রাম্প বাণিজ্যিক অংশীদার চীন, কানাডা, মেক্সিকোর উপর ব্যাপক শুল্ক আরোপ করে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)-তে আমেরিকার আর্থিক অনুদান স্থগিত করে। এপ্রিল ’২৫-এ  ট্রাম্প ১৮০টিরও বেশি দেশের উপর ১০%  বা তার বেশি শুল্ক আরোপ করে। পরে ৫৭টি দেশের উপর উচ্চতর শুল্ক সাময়িকভাবে স্থগিত করেন। এবং চীনের উপর শুল্ক বাড়িয়ে ১৪৫% করে। যা সামগ্রিক বাণিজ্যের গড় শুল্ক ২৪% নিয়ে যায়। যার ফলে মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধের মুখোমুখি। চীন এখন ভারত-ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ সকল রাষ্ট্রকে নিয়ে মার্কিন বিরোধী জোট গঠনের ডাক দিয়েছে।   

ঘোষিত নতুন বিদেশ নীতিতে ইউক্রেন-সিরিয়া-ফিলিস্তিন-লেবানন-ইরান-ইয়েমেনসহ যুদ্ধ বিধ্বস্থ দেশগুলো আরো ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পরপরই নির্লজ্জের মতো এই বুড়ো ব্যবসায়ী দানব ইউক্রেনের মূল্যবান খনিজ সম্পদের শেয়ার দাবি করে এবং ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা খালি করে বিনোদন কেন্দ্র বানানোর ঘোষণা দেয়। যা মধ্যযোগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। একই সাথে আমেরিকান সভ্যতা তথা বুর্জোয়া গণতন্ত্রের ভন্ডামির খোলস নগ্নভাবে প্রকাশিত হয়েছে। 

 ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই ডেমোক্রাট প্রেসিডেন্ট বাইডেনের পথ ধরেই তুরস্কের ধর্মবাদী ফ্যাসিস্ট এরদোগানের সাথে মিলে আমেরিকার প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়ার মধ্যপ্রাচ্যে সোল এজেন্ট/দালাল সিরিয়ার ফাসিস্ট আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে সিরিয়ায় তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। শুধু তাই নয়, এখন মার্কিন-তুরস্ক যৌথ বাহিনী কুর্দিস্তানে আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের জন্য সংগ্রামরত মাওবাদী ও জাতীয়তাবাদীদের উচ্ছেদের ঘোষণা দিয়ে কুর্দি জনগণের উপর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। 

খুনি বাইডেনের শাসন আমলে শুরু হওয়া যুুুুুুুুুু্দ্ধে ইসরাইল ফিলিস্তিনে প্রায় ৫০ হাজারের বেশি জনগণকে হত্যার পরে প্রথমবার যুদ্ধ বিরতি চলছিল। বর্তমানে ফ্যাসিস্ট ট্রাম্পের মদদে ইসরাইল সেই যুদ্ধ বিরতি ভঙ্গ করে দ্বিতীয় দফা গণহত্যা চালাচ্ছে। অন্যদিকে মার্কিন সেনাবাহিনী পার্শ্ববর্তী ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের দমনের জন্য সরাসরি বিমান হামলার পরে স্থল বাহিনী নামানোর ঘোষণা দিয়েছে। বাশার সরকার পতনের পর সিরিয়ায় ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে।  

মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও তার পাচাটা ইসরাইলের চিরশত্রু ধর্মবাদী ইরানকে নিয়ন্ত্রণের জন্য ইরানে ইসরাইলের মাধ্যমে আক্রমণ/আগ্রাসনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই যুদ্ধ-চাপের পাশাপাশি আলোচনার মাধ্যমে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধের জন্য চুক্তি করতে চাইছে। এভাবে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ভয়াবহ যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে বিশ্বযুদ্ধের হুমকি সৃষ্টি করছে। 

ট্র্যাম্পের এই ফ্যাসিবাদকে আইন সম্মত দেখানোর জন্য অতি সম্প্রতি মার্কিন সুপ্রীম কোর্ট প্রেসিডেন্টকে বিরল যুদ্ধকালীন আইন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। যে আইনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট তার শত্রু দেশের নাগরিকদের কোনো ধরনের আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই আটক বা শাস্তি প্রদান করতে পারবে। অভিবাসীদের উপর বিভিন্ন ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে। 

মার্কিন অর্থনীতিতে চরম সংকট বিরাজমান। তাই ট্রাম্প প্রশাসন অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ ব্যয় কমানো এবং বাণিজ্য যুদ্ধের মাধমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য উপরোক্ত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করে মার্কিন অর্থনীতি চাঙ্গা করতে চাচ্ছে। পাশাপাশি চীনকে কোণঠাসা করে বিশ্বব্যাপী নিজ কর্তৃত্ব বজায় রাখা বা মধ্যপ্রাচ্যে একক কর্তৃত্ব সৃষ্টি করাই তার লক্ষ্য। যার প্রেক্ষিতে বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার কথিত মানবিক কর্মসূচির ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। বিশেষত আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইয়েমেনসহ ১১টি যুদ্ধবিধ্বস্থ দেশ আরো সংকটে পড়বে। জাতিসংঘ এই সিদ্ধান্তকে মৃত্যুদণ্ডের সাথে তুলনা করেছে। ট্রাম্পের এই সব নীতির জন্য মার্কিন সহ বিশ্ব জনগণের উপর যুদ্ধসহ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মরার উপর খাড়ার ঘাঁ নেমে আসছে। এর জন্য খোদ মার্কিনী জনগণ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী বিক্ষোভ শুরু করছে। ইসরায়েল প্রশ্নে বিশ্ব জনগণ ক্ষোভে ফুঁসছে। 

সাম্রাজ্যবাদ-পুঁজিবাদ যখন ঘোরতর সংকটে পড়ে, তখন যুদ্ধ বাধিয়ে, যুদ্ধের মাধ্যমে সংকট মোচন করার চেষ্টা করে, এমনকি বিশ্বযুদ্ধের হুমকিতে ফেলে। মহামতি লেনিন বলেছেন– সাম্রাজ্যবাদ মানে যুদ্ধ-ধ্বংস। ট্রাম্প এখন সে পথেই তার সংকট মোচনের পথ খুঁজছে। বিপরীতে বিশ্ব জনগণের বিদ্রোহ-বিক্ষোভ সাম্রাজ্যবাদের করব খুঁড়ছে। প্রয়োজন এখন শ্রমিকশ্রেণির নেতৃত্বে এই বিদ্রোহ-বিক্ষোভকে পরিচালিত করা। 

         – ২২ এপ্রিল, ২০২৫

আরও খবর
 
শনি
রোব
সোম
মঙ্গল
বুধ
বৃহ
শুক্র